
তাহসান খান ইনস্টাগ্রাম
বিনোদন অঙ্গনে আলো ছড়ানো অনেক তারকার রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁরা সেরা শিক্ষকের সান্নিধ্য যেমন পেয়েছেন, তেমনি পেয়েছেন অসাধারণ সব বন্ধুর সাহচর্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলেন তাহসান রহমান খান।
মায়ের শিক্ষকতার সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেই আমার বেড়ে ওঠা। শিল্পী হওয়ার পেছনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আলো–বাতাসের বড় অবদান। যে বয়সে অনেকে বাসা থেকে বের হতে পারে না, সেই বয়সে আমি অনেক কনসার্ট দেখে ফেলি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারে থাকতাম, তাই হলের কনসার্ট হলেও থাকতাম। নব্বইয়ের দশকে অনেক নামকরা ব্যান্ড ছিল—ফিডব্যাক, মাইলস, নগরবাউল, এলআরবি। সংগীতের সঙ্গে প্রেমের ব্যাপারটা এ কারণেই তৈরি হয়েছে।
ছোটবেলায় অনেকের গান শুনতে পেরেছি। ছায়ানটে গান শেখার ব্যাপারটাও এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণে হয়েছে। তখন ছায়ানটের ক্লাস হতো ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলে। প্রতি সপ্তাহে গান শেখাটা সহজ ছিল। রবীন্দ্রসংগীত বা পাশ্চাত্য সংগীতে সখ্য—দুটোই এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়ে ওঠার কারণে হয়েছে।
যখন আইবিএতে ভর্তি হলাম, তখন ব্যান্ড করা শুরু করি।
এরপর ক্যাম্পাসে গাওয়ার সুযোগও তৈরি হয়। ক্রিয়েটিভ কাজ করার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ওই চার বছরে হয়েছে। তখন হয়তো বুঝতাম না এটা আমার পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলবে
আমার শিল্পীসত্তার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভূমিকা রয়েছে। আইবিএতে পড়ার কারণে অন্য বিভাগের বন্ধুরা ক্যানটিনে আসত, অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হতো। অনেক স্তরের মানুষের সঙ্গে মেশার কারণে মেধা–মননের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছে। আমার মনে হয়, আজকে আমি যে মানুষটা হয়েছি, এই মানুষটা হয়ে ওঠার পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনেক অনেক বেশ
শুধু শিক্ষক বা বন্ধুবান্ধব নয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশটাও একটা প্রভাবক। প্রতিটি কড়ইগাছও যেন অনুপ্রেরণা। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও জারুল যখন ক্যাম্পাসজুড়ে ফুটত, সেখানেই হয়তো নান্দনিকতার দারুণ একটা বহিঃপ্রকাশ দেখতে পারতাম। এমন দৃশ্য ঢাকায় আর কোথায় পাব। প্রতিবছর অপেক্ষা করতাম কবে একসঙ্গে ফুটবে এসব ফুল। স্কুল-কলেজে অনেক রকম শাসন থাকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমনটা নয়। জীবনের একটা নতুন অধ্যায়।